জ্বলদর্চি

আশিস মিশ্র


আ শি স  মি শ্র

ওরে বিহঙ্গ, এখনি তোমার
 ডানা বন্ধ করো না


এই সংকট আমাদের জীবন কি সত্যিই বিপন্ন করে তুলেছে? পৃথিবীর বিপন্নতার কতটুকু জানি।পৃথিবীতে কতো ঘটনাই ঘটে। ঘটে চলেছে কোটি কোটি বছর ধরে। মানুষ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মানুষ বলেই তো সে এতো পারে। যখন রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনের চারপাশে নিকট জনদের একের পর এক মৃত্যু দেখছেন, চরম মৃত্যু যন্ত্রণা তাঁকেও বিদ্ধ করছে..তাঁরও  আত্মহত্যা করার প্রবণতা মনে জাগে। কিন্তু না। তিনি ফিরে এসেছিলেন। নিজের সৃষ্টির কাছে। তাঁর জীবনের যেটুকু জানি আমরা, সেটুকুই একজন ডুবন্ত মানুষের কাছে প্রেরণা হয়। যে প্রেরণার পরম প্রসাদ গ্রহণ করে আমরা আনন্দ পাই, তেমনই এই সংকট কালে রবীন্দ্র -গানের নৈবেদ্য আমাকে বাঁচার প্রেরণা দিচ্ছে। আমি গেয়ে উঠি---শুধু তোমার বাণী নয় গো হে বন্ধু  হে প্রিয়... 

তাঁর গানের পরশে, তাঁর  জীবন চর্যার অনুভূতি নিয়ে যে কোনো সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব বলেই আমার বিশ্বাস। জীবনকে তিনি তো অবিশ্বাসী হতে বলেননি। 
মণিহারকে যিনি তুচ্ছ ভেবেছেন, একের পর এক প্রিয় মানুষ তাঁকে সমালোচনায় বিদ্ধ করছেন, কী অসীম স্বপ্ন নিয়ে  গড়ে তুলছেন শান্তিনিকেতন, নিজ স্বদেশ যখন পরাধীন..এসব কিছুর পরও তিনি লিখে চলেছেন। সাহিত্য-শিল্প সৃষ্টির সমস্ত দিক ছুঁয়ে থাকা এই মানুষই আমার -আপনার কাছে এখনো সত্য-আলো। এতো অন্ধকার, তবুও তো তিনি  লিখছেন... আলো আমার আলো ওগো আলোয় ভুবন ভরা...মনে হয় এই মানুষ -জীবন যখন সর্বদা আলো -অন্ধকারের ভেতর যাত্রা করছে,তখন সেখানে সুখ-দুঃখ থাকবে। তাকে হাসি মুখেই গ্রহণ করবো। তিনি তো বলছেন... আছে দুঃখ আছে মৃত্যু... আবার কবি বলছেন... আনন্দধারা বহিছে ভুবনে...সেই আনন্দে সংকটেও আমার আত্মা-পাখির ডানা বন্ধ নেই।  সে উড়েই চলেছে....।

--------

Post a Comment

0 Comments