জ্বলদর্চি

সৌগত ঘোষ


সৌ গ ত  ঘো ষ

এইসময় ও রবীন্দ্রনাথ


যুদ্ধবিগ্রহ,মারণাস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা ও প্রয়োগ,সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সাম্রাজ্য বিস্তারের বিশ্ব-অভিযান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণতা,দুর্ভিক্ষ-মহামারী ইত্যাদি নানাভাবে মাঝে মাঝে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষের জীবনে আকস্মিক বিপর্যয় ডেকে আনে।মানুষ আঘাতপ্রাপ্ত হয়,কুফল ভোগ করে,অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়,অহেতুক প্রাণহানি ঘটে,চলমান জীবন স্তব্ধ হয়ে পড়ে,সংবেদনশীল চিত্ত তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানায়, কখনও কখনও বিদ্রোহ করে,ক্রোধে প্রমত্ত হয়-রবীন্দ্রনাথও তার ব‍্যতিক্রম নন।ঐসব ঘটনাকে দৃষ্টিপথে স্থাপন করে রবীন্দ্র সাহিত্য থেকে মানবতার চিরন্তন বাণী কখন কিভাবে উচ্চারিত হয়েছে ইতিহাস তার সাক্ষ‍্য বহন করে চলেছে। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে আমরা আরও একবার সেই সময়ের মুখোমুখি হয়েছি।
       করোনা(কোভিড-১৯)নামক ভাইরাসের করাল গ্রাসে আজ সমগ্ৰ বিশ্ব আতঙ্কিত। মুক্তির পথ অজানা। বিজ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিত্রাণের পন্থা উদ্ভাবনের প্রচেষ্টায় পদে পদে ব‍্যর্থ। একমাত্র অবলম্বন মানবজাতির সম্মিলিত সহযোগিতা- যার নামান্তর "লকডাউন"।
  
রবীন্দ্রনাথ রাজনীতিবিদ নন,শান্তিকামী ও মানবিক আদর্শের প্রতিভূ- মারণযজ্ঞের ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণনাশের সংবাদে মর্মান্তিক দুঃখ ও যন্ত্রণা ভোগ করতেন তিনি। আজ সমগ্ৰ জগৎ মৃত্যুর আশঙ্কায় শঙ্কিত।ইতিমধ্যেই কয়েকমাস যাবৎ চিন,ইতালি, স্পেন,আমেরিকা ইত্যাদি দেশের বক্ষ রক্তরঞ্জিত হয়ে চলেছে। অদৃশ্যে থেকে শত্রু যুদ্ধের তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে।অস্ফুটস্বরে মানবজাতির করুণ আর্তনাদ--আমাকে বাঁচাও, সমস্ত মানবজাতিকে বাঁচাও--এই বাণী মুখরিত হয়ে আকাশকে বিদীর্ণ করে দিচ্ছে। কিন্তু কেন এই আর্তনাদ?এই আত্মঘাতী যুদ্ধের মূল কোথায়?কেমন করে এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটবে তাও কেউ জানে না।রবীন্দ্রনাথের মতো মানবিক কবি তাই যুদ্ধকে চিরদিনই পরিহার করে শান্তির বাণী প্রচার করে এসেছেন। সত‍্যদ্রষ্টা প্রজ্ঞাবান কবির(রবীন্দ্রনাথের) কথা মিলে গেছে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে।
---------

Post a Comment

0 Comments