জ্বলদর্চি

মঙ্গলপ্রসাদ মাইতি


ম ঙ্গ ল প্র সা দ  মা ই তি 

এইসময় ও রবীন্দ্রনাথ


বিশ্বসংসারে রবীন্দ্রনাথ হলেন এক অত্যাশ্চর্য প্রতিভাধর মানুষ। যে প্রতিভার জোরে তিনি সমগ্র জগতবাসীর
 হৃদয়ে একটি স্থায়ী আসন লাভ করে নিয়েছেন। বেঁচে আছেন আমাদের অন্তরে। বেঁচে থাকবেন আগামীদিনেও। তাঁর অতুলনীয় সাহিত্যপ্রতিভা আমাদের কাছে আজও বাঁচার মন্ত্র। হ্যাঁ, আজকের এই দুঃসময়ে দাঁড়িয়েও যে কথা নির্দ্ধিধায় স্বীকার করে নেওয়া যায়। আসলে তিনি তো শুধু কবি ছিলেন না, কেবলমাত্র একজন সাহিত্যিক ছিলেন না – তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থেই মানবপ্রেমিক, অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক, অন্যতম সেরা চিন্তাবিদ। আনন্দ-খুশির পাশাপাশি রোগে-শোকে-তাপে-দুঃখে আর ব্যথায় আর্তিতেও হয়ে উঠেছেন আমাদের একমাত্র আশ্রয়দাতা, পথ-প্রদর্শক। না, রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে আমাদের একমুহূর্তও চলে না। বড়ো মাপের একজন শিক্ষক হয়ে তিনি প্রতিমুহূর্তে আমাদের পথ দেখিয়ে চলেছেন। তিনি যখন আমাদের বলেন – “বিপদে মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা-বিপদে আমি না যেন করি ভয়।” এই অভয় মন্ত্র উচ্চারণ করে আমরা কিছুটা হলেও তো সাহস পাই। আবার অন্যত্র তিনি বলছেন – “জীবন যখন শুকায়ে যায় করুণাধারায় এসো।/সকল মাধুরী লুকায়ে যায়, গীতসুধারসে এসো॥” 
এ তো আমাদের হয়েই তাঁর করুণ আর্তি ঝরে পড়েছে। অতি জোরের সঙ্গে তিনিই তো উচ্চারণ করেছেন “দুখের বেশে এসেছ বলে তোমারে নাহি ডরিব হে।” এই মুহূর্তে আমরা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। সমগ্র বিশ্ববাসী এক কষ্টের মধ্যে রয়েছে। একটা অজানা আশঙ্কায় আতঙ্কগ্রস্ত আমরা ভারতবাসীরাও। ভয়ের এই কঠিন সঙ্কটকালে রবীন্দ্রনাথই যেন আমাদের ভরসা, অনেকখানি অন্ধকারে আলোর দীপশিখা। কালোত্তীর্ণ, বিশ্বজনীন রবীন্দ্রনাথকে আমাদের হৃদয়ের প্রণাম।  

-------

Post a Comment

0 Comments