জ্বলদর্চি

অনুপ মাহাত


অ নু প মা হা ত

এই সময় ও রবীন্দ্রনাথ


এই সময় বলতে আমি বর্তমান সংকটের  সময়কে বলতে চাইছি। ঘরবন্দী আছি। দরজা জানালা বন্ধ করে আছি। এ অবস্থায় ক্রমশ খুলে যাচ্ছে মনের জানালা দরজাগুলো। সব একাকার হয়ে যাচ্ছে। সব সীমানা যাচ্ছে ভেঙে। দেশ জাতি ধর্মের মতো আবেগগুলো কেমন যেন হাল্কা হয়ে আসছে। সারা বিশ্বকে মিলিয়ে দেওয়ার সংকল্প নিয়েছে যেন এক অদৃশ্য শক্তি। ইতিহাস অনেক যুদ্ধ-মৈত্রীর সাক্ষী। কিন্তু বিশ্বকে একটি মিলন ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলার মহৎ উদ‍্যোগ কই? পারমাণবিক শক্তি, অস্ত্র, অর্থের মাধ্যমে বিশ্বে রাজ করার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা কই? মানব সভ্যতার অগ্রগতি কি কেবল বস্তুগত? কেবল ব‍্যক্তিগত ? নিশ্চিতরূপে না। সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানবিকতা। আর এখানেই এসে পড়ে রবীন্দ্রনাথের কথা। তাঁর কাছে সারা পৃথিবী একটাই দেশ। মানুষকে কোথাও একটা তো মিলতেই হবে। তাই বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা তিনি-ই করতে পারেন। তিনি-ই বলতে পারেন এমন কথা -- 'সব ঠাঁই মোর ঘর আছে, আমি সেই ঘর মরি খুঁজিয়া;/ দেশে দেশে মোর দেশ আছে, আমি সেই দেশ লব যুঝিয়া।' কিন্তু আমরা কী দেখছি! 

দেখছি সংকটকালেও অপরকে শায়েস্তা করার আস্ফালন। দেখছি ক্ষমতার দম্ভ। তবুও পৃথিবীতে মানুষের ওপর বিশ্বাস রেখে যেতে হবে। রবীন্দ্রনাথ বলতেন 'মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ।' সময় আর প্রকৃতি সবকিছুকে নতুন করে ভেঙে গড়ে নেবে। আর এই নব নির্মাণে রবীন্দ্রনাথ আমাদের সহায় হতে পারেন-- হতে পারেন আমাদের সংকট মুক্তির ঠিকানা।

-------

Post a Comment

0 Comments