জ্বলদর্চি

রীতা দেব বেরা


রী তা  দে ব বে রা

এই সময় ও রবীন্দ্রনাথ     


রবীন্দ্রনাথ বাঙালির শয়নে, স্বপনে, চিন্তনে , মননে। রবীন্দ্রনাথ সর্বত্র। বাঙালির নিত্য জীবনের অঙ্গ রবীন্দ্রনাথ। সুখেদুঃখে , আনন্দ-উল্লাসে যেখানেই  খুঁজেছি প্রাণের ঠাকুরকে আমরা সেখানেই পেয়েছি ।
  আজ বিশ্ব করোনা ভাইরাস নামক মৃত‍্যু মহামারির মুখোমুখি। এর আগেও বিশ্ব মহামারি দেখেছে , কিন্তু তা ছিল দৃশ‍্যমান । সহজেই রোগের উপসর্গ দেখা যেত । বিজ্ঞান যত উন্নত হয়েছে , রোগের ধরনও পাল্টেছে ততটাই। সে এখন অদৃশ‍্য শত্রু। যাকে খুঁজে বার করতেই সময় , অসময়ে পরিণত হয়েছে। এই সঙ্কটকালীন পরিস্থিতিতেও আমরা রবীন্দ্রনাথকে পাই তাঁর  লেখনীর মধ‍্যে দিয়ে , --
 " আজ যখন পশ্চিম দিগন্তে
  প্রদোষকাল ঝঞ্ঝাবাতাসে রুদ্ধশ্বাস ,
যখন গুপ্ত গহ্বর থেকে পশুরা বেড়িয়ে এলো
অশুভ ধ্বনিতে ঘোষণা করলে দিনের অন্তিম কাল "।

যেন তিনি আগেই বুঝতে পেরেছিলেন দিনের অন্তিমকাল আগত। গুপ্ত গহ্বরের শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করার কতটুকু ক্ষমতাই বা আছে মানব জাতির ।
  এই সঙ্কটকালীন পরিস্থিতিতে যখন আমরা জীবনের নতুন পথ অনুসন্ধান করি -- সে পথ বাঁচার পথ , মুক্তির পথ , আশ্রয়ের পথ। আর তখন  বিশ্বকবির মহাআশ্রয়স্থলে  আমরা আশ্রয় খুঁজে পাই। তার কথায় বলি , 
" বিশ্বজনের পায়ের তলায় ধূলিময় যে ভূমি 
 সেইতো স্বর্গ ভূমি।
মৃত‍্যু আপন পাত্রে ভরি বহিছে যে প্রাণ 
সেই তো তোমার প্রাণ।"
তাঁর মন্ত্রে আমরা আবার নতুন করে বেঁচে উঠি ।
  সঙ্কট  দিনে গুরুদেব সমস্ত ভারতবাসীকে এক হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন তাঁর লেখনীর মাধ‍্যমে।
" এসো ব্রাক্ষণ শুচি করি মন ধরো হাত সবাকার 
এসো হে পতিত হোক অপনীত সব অপমান ভার।"
সমাজের উচ্চ শ্রেণিকে নিম্নবর্ণের হাত ধরে উত্তরণের স্পষ্ট সঙ্কেত পাই তাঁর  এই লেখনী থেকে। কারণ তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন , তা না হলে ভারত কখনও ভারতবর্ষ হয়ে উঠতে পারবে না।
     জীবন প্রবাহমান, তাই, সব সংঙ্কটের অবসান ঘটিয়ে আবার নতুন সূর্য উঠবে। মারণ করোনার বিনাশ হবেই। নতুন বসন্তে প্রকৃতি আবার রঙিন হয়ে উঠবে। আমরা আশ্বস্ত হই যখন সংশয়  জীবনের আশ্রয়স্থলে রবীন্দ্রনাথকে পাই তাঁর অমোঘ বাণীর মধ‍্য দিয়ে।
"শান্ত হে মুক্ত হে , হে অনন্ত পুণ্য 
করুণাঘন ধরনীতল কর' কলঙ্ক শূন‍্য।"

-----

Post a Comment

1 Comments

  1. সত্যি রীতা দি অসাধারণ লেখনী শক্তি কল্পনা শক্তি অসাধারণ কলম ধরলেই লেখা বেরোয়

    ReplyDelete