জ্বলদর্চি

রামকৃষ্ণ মহাপাত্র


রা ম কৃ ষ্ণ  ম হা পা ত্র 

এই সময় ও রবীন্দ্রনাথ


"বিপদে মোরে রক্ষা করো, এ নহে মোর প্রার্থনা
বিপদে আমি না যেন করি ভয়।
দুঃখতাপে-ব‍্যথিত-চিতে নাই বা দিলে সান্ত্বনা
দুঃখে যেন করিতে পারি জয়।"

এ-কথা বলেছেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। যিনি আমাদের কাছে অনন্ত আশ্রয়। এক অনাবিল দীর্ঘ শীতল ছায়া। পথ ভ্রমণের শেষে ক্লান্ত পথিক যেখানে দু'দণ্ড প্রাণের আরাম পায়। সুখ, দুঃখ, শোক, যন্ত্রণায় রবীন্দ্র-সৃষ্টির কাছে বারবার নতমস্তকে ফিরে ফিরে আসি আমরা। সুদূরের নৌকা ভিড়াই। এই ঘোর সংকট-সময়ে রবীন্দ্রনাথই আমাদের আশার বাণী শোনান। পথ দেখান ক্রমমুক্তির। আমাদের আত্মপ্রত‍্যয়কে জাগ্রত করেন। আসলে রবীন্দ্রনাথের সমস্ত সৃষ্টির মনোভূমি জুড়েই রয়েছে আশাবাদ ও বিশ্বমানবতাবোধের গভীর দর্শন। যা আমাদের এই অস্থির সময়ে বেঁচে থাকার অন‍্যতম শুশ্রূষা। রবীন্দ্রনাথ তো আমাদের চেতনা। অন্ধকারে আলোর দিশারী। সংকট মোচনের আরেক নাম। তাঁর সৃষ্টির নিভৃত চর্চায় ঘটে মানবসভ‍্যতার ব‍্যধিমুক্তি। পৃথিবীর গভীর, গভীরতর অসুখ এখন। বিশ্বনিখিল জুড়েই সর্বগ্রাসী মৃত‍্যুভয়, আমাদের চিন্তা ও চেতনাকে আচ্ছন্ন করে ক্রমশ। হৃদয় আড়ষ্ট হয় বারবার, এই সময়ে। তবুও তুমি আছ রবীন্দ্রনাথ। আশা আছে, আলো আছে। 
আজ এ-দুঃসময়ে বিশ্বজনের প্রাণে প্রাণে সঞ্চারিত হোক তোমারই মৃত‍্যুঞ্জয়ী অমোঘ মন্ত্র --
"যত বড়ো হও,
তুমি তো মৃত‍্যুর চেয়ে বড়ো নও।
'আমি মৃত‍্যু-চেয়ে বড়ো' এই শেষ কথা ব'লে
যাব আমি চলে।"
-------

Post a Comment

0 Comments