নী লোৎ প ল জা না
বোধোদয়
মশারির ঘেরাটোপ এড়িয়ে ঢুকে পড়ে মশা
হয়তোবা জানে সে,মৃত্যু শিয়রে
বাহারি বাগানে অনামা ফুলের কদর নেই—
তবুও কী মানব জীবন ডাম্পারে থেঁতলে যাওয়া মুখের মতো
নদীর জলে ভাসমান, চলকানো চাঁদের মতো
বেঁচে থাকতে চায় ?
কোথায় পালাবে তুমি—
ঘাটের কাছে কুমিরের বড় মুখ হাঁ করে আছে
লুকোচুরি সাঙ্গ হবে …
হৃদয়ের কথা
আজ আর কোলাহল নেই শুধু নিস্তব্ধতা।
অনেক দূর থেকে ভেসে আসে কাঁসরের শব্দ,
শব্দ যেন বার বার বলে; পালাবার পথ নেই-
এইতো সেদিন কত কাছাকাছি ছিলাম...
অথচ কেউ কারোর খোঁজ নিতে চাইনি,
আজ সবাইকে আপন করতে চাইলেও
দূর থেকে ভেসে আসে দুঃখের সানাই।
সকলে এক আকাশের নীচে --
এক নক্ষত্রের আলোয় আমরা
হায়! তবু কতদূরে মনে হয়
তবুও সকলের পথ এক জেনেও
অন্তর কেঁদে ওঠে বাঁচবার শেষ ইচ্ছায়।
গভীর অসুখ
বিশ্বময় গভীর অসুখ এখন।
মানুষ খুঁজছে বেঁচে থাকার রাস্তা।
দৃষ্টির সামনে সবকিছু আজ ধূসর,পান্ডুর,
আতঙ্কের রাত্রি আরো গভীর গভীরতর হয় ঘুমের মধ্যে।
চমকে উঠে পড়ি ,মৃত্যু লুকিয়ে যায় শিয়রে
পালাবার পথ ভাবতে গিয়ে আবার তন্দ্রা আসে
নিজেকে নিজের সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করি---
এতো আমরাই সৃষ্টি করেছি
তখন অস্বীকার করেছি ,ভেবেছি যত-সব পাগলের প্রলাপ--
আসলে ,এক একটি ভুল বোঝা গভীর সমুদ্রের কুয়াশার মতো
আবছা করে দেয় এক একটি সভ্যতাকে।
তবে যত ঝড় আসুক,ঝড় একদিন থেমে যাবে
প্রভাত- পাখির গানে চারদিক মুখরিত হবেই,
আশা আর আশ্বাস আমাদের।
নদী ও নারী
নদী ও নারীকে আলাদা ভাবিনি কখনও
তাই নারী যতই নিজেকে গোপন করুক না কেন
সমস্ত শরীর তার খোলা ;সে যে সর্বংসহা মা।
যারা মা’কে মেয়ে মানুষ ভেবে চেটে নিতে চায়
তাদের জিভ খসে যাক ধূসর পাতার মতো
গাভীর মতো ভালোবাসা বুকে নিয়ে
যে রাত দিন আগলে রাখে ছোট-বড় প্রাণ
তাকেই লজ্জিত হতে হয় সন্তানের কাছে
এ আমার এ তোমার পাপ ।
উদ্বাস্তু
সকাল থেকে মন ভালো নেই আমার
আকাশও মেঘলা হয়ে আছে
চোখ আটকে যাচ্ছে কুয়াশায়
যেন ঘসা কাঁচ দিয়ে দেখা কোনো চিত্র ।
চার দিকে উলুধ্বনি
মাঙ্গলিক কিছু মনে হয়, কিন্তু
হৃদয়ের ঘরগুলো যন্ত্রণায় পূর্ণ;কারণ
চলে যেতে হবে বাসস্থান ছেড়ে,আর মাত্র কটাদিন
মনে পড়ে ছোট বেলার কথা ।
পদ্মার পার থকে ভেসে আসতো
আজানের ধ্বনি আর কাঁসরের শব্দ----
বাবা গভীর রাতে আমাদের সবাইকে নিয়ে
কাঁটাতার পেরিয়ে চলে এসেছিলেন
সঙ্গে একটি তুলসী গাছ
এটাই ছিল শেষ সম্বল আমাদের।
আজ এই মেঘলা দিনে বারবার মনে পড়ছে সেদিনের কথা।
----
0 Comments